| বঙ্গাব্দ

২০২৫ সালে ইউকে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া ও প্রস্তুতির বিস্তারিত গাইডলাইন

রিপোর্টারের নামঃ Desk Report
  • আপডেট টাইম : 20-05-2025 ইং
  • 4172 বার পঠিত
২০২৫ সালে ইউকে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া ও প্রস্তুতির বিস্তারিত গাইডলাইন
ছবির ক্যাপশন: ২০২৫ সালে ইউকে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া ও প্রস্তুতির বিস্তারিত গাইডলাইন

২০২৫ সালে ইউকে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া ও প্রস্তুতির বিস্তারিত গাইডলাইন

যুক্তরাজ্য বিশ্বের অন্যতম গুণগতমানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা প্রদানকারী দেশ। প্রতিবছর হাজারো বাংলাদেশি শিক্ষার্থী UK-তে পড়াশোনার সুযোগ খোঁজেন। আপনি যদি ইউকে স্টুডেন্ট ভিসার (Student Visa – আগে Tier 4 নামে পরিচিত) জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য চূড়ান্ত গাইড হিসেবে কাজ করবে।


ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করার আগে যা জানা দরকার

Student Visa (General) হলো এমন একটি ভিসা যা UK-এর কোনো অনুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফুল-টাইম কোর্সে পড়াশোনার সুযোগ দেয়। এই ভিসা সাধারণত কোর্সের মেয়াদ অনুযায়ী ১ বছর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে।


ধাপ ১: বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত করা (CAS পেতে হবে)

CAS (Confirmation of Acceptance for Studies) হচ্ছে একটি রেফারেন্স নম্বর যা বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে অফার দেয় ভর্তির পর। এটি ভিসা আবেদনের মূল ডকুমেন্ট।

ভর্তির জন্য যা প্রয়োজন:

  • HSC বা সর্বশেষ একাডেমিক সার্টিফিকেট
  • IELTS/TOEFL/পিয়ারসন ইত্যাদি ইংরেজি দক্ষতার সনদ (যদি প্রয়োজন হয়)
  • SOP (Statement of Purpose)
  • Academic CV
  • Reference Letter (২টি)
  • পাসপোর্ট স্ক্যান কপি

ধাপ ২: IELTS বা ইংরেজি দক্ষতার প্রমাণ

UKVI (UK Visa and Immigration)-অনুমোদিত IELTS (IELTS for UKVI – Academic) স্কোর অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়।
সাধারণত স্কোর প্রয়োজন হয়:

  • Foundation Course: 4.5–5.0 overall
  • Undergraduate: 6.0–6.5 overall
  • Postgraduate: 6.5–7.0 overall

বিকল্প হিসেবে Duolingo, TOEFL, PTE অনেক বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করে — তবে ভিসা আবেদনের জন্য UKVI অনুমোদিত IELTS থাকাই নিরাপদ।


ধাপ ৩: ফান্ড এবং ফাইনান্সিয়াল ডকুমেন্ট প্রস্তুত করা

Student Visa আবেদন করতে হলে আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে আপনি:

  1. টিউশন ফি পরিশোধ করতে পারবেন
  2. ইউকে-তে থাকা ও খাওয়ার খরচ বহন করতে পারবেন

কত টাকা থাকতে হবে ব্যাংকে?

লন্ডনের বাইরে পড়লে:

  • প্রথম বছর টিউশন ফি + প্রতি মাসে £1,023 x 9 = £9,207
    লন্ডনে পড়লে:
  • টিউশন ফি + £1,334 x 9 = £12,006

অর্থাৎ আপনার ব্যাংকে থাকতে হবে:

  • CAS-এ লেখা বাকি টিউশন ফি + ৯ মাসের লিভিং কস্ট

অর্থ অবশ্যই থাকতে হবে:

  • ব্যাংকে কমপক্ষে ২৮ দিন ধরে একই একাউন্টে
  • একাউন্ট হতে পারে নিজের, পিতা-মাতা অথবা বৈধ স্পনসরের

ধাপ ৪: ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া (Application Submission)

আবেদন করতে হবে:

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট:

  • Valid Passport
  • CAS Letter
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট/সার্টিফিকেট
  • Academic Certificates and Transcripts
  • TB Test Certificate (বাংলাদেশের জন্য আবশ্যক)
  • IELTS/English Language Certificate
  • ATAS Certificate (যদি আপনার কোর্সের জন্য প্রযোজ্য হয়)
  • Visa Fee & IHS (Immigration Health Surcharge) ফি প্রদানের রশিদ

ধাপ ৫: ভিসা ফি ও স্বাস্থ্য সারচার্জ (IHS)

ভিসা আবেদন ফি:

  • £490 GBP (Tier 4 Student Visa)

IHS ফি:

  • প্রতি বছর £776 GBP
  • এক বছরের কোর্স হলে IHS = £776
  • দুই বছরের কোর্স হলে = £1,552

এই ফি জমা দিতে হবে আবেদন চলাকালে অনলাইনেই।


ধাপ ৬: ভিসা ইন্টারভিউ (Credibility Interview)

UKVI কখনও কখনও ফোন বা ভিডিও কলের মাধ্যমে আপনাকে একটি সাক্ষাৎকারে ডাকতে পারে। এখানে তারা বুঝতে চায়:

  • আপনি সত্যিকারের শিক্ষার্থী কি না
  • কেন UK-তে পড়তে চান
  • কোর্স সম্পর্কে আপনার ধারণা
  • ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

সাক্ষাৎকারে যা বলবেন:

  • আপনার কোর্স, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিষয় চয়ন কেন করেছেন
  • এই কোর্স আপনার ভবিষ্যতে কিভাবে কাজে লাগবে
  • আপনি কিভাবে খরচ বহন করবেন

ধাপ ৭: ভিসা সিদ্ধান্ত এবং ট্রাভেল প্রস্তুতি

ভিসা রেসাল্ট পেতে সাধারণত সময় লাগে:

  • Decision Within: ১৫ কার্যদিবস (Standard Service)
  • Priority ও Super Priority সার্ভিসেও আবেদন করা যায়, অতিরিক্ত ফি দিয়ে।

ভিসা পেলে:

  • Vignette sticker পাসপোর্টে থাকবে (১ মাসের জন্য)
  • UK গিয়ে ১০ দিনের মধ্যে BRP (Biometric Residence Permit) সংগ্রহ করতে হবে

UK-তে যাওয়ার আগে করণীয় চেকলিস্ট

  • ফ্লাইট বুক করা
  • BRP সংগ্রহের স্থান নিশ্চিত করা
  • থাকার জায়গা নিশ্চিত করা
  • জরুরি কাগজপত্র প্রিন্ট করে রাখা
  • প্রথম মাসের খরচ হাতে রাখা

উপসংহার

ইউকে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন একটি সুপরিকল্পিত ও ধৈর্যপূর্ণ প্রক্রিয়া। সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিলে এবং ডকুমেন্টেশন সঠিক থাকলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। অনেকে শুধুমাত্র ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা SOP ত্রুটির কারণে ভিসা পান না। তাই প্রতিটি ধাপ গুরুত্ব সহকারে অনুসরণ করা জরুরি।




নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
নামাজের সময়সূচী
জাতীয় সঙ্গীত
©সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ Sylheter Khobor | সিলেটের খবর | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ